নিরাপদ প্রসবের প্রস্তুতি ও গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব–পরবর্তী বিপদ লক্ষণ
আমাদের দেশে মাতৃমৃত্যুর একটা বড় কারণ প্রসবকালীন জটিলতা। গর্ভকালীন সবকিছু স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও দেখা দিতে পারে প্রসবকালীন জটিলতা, অনেক ক্ষেত্রে যা হয়ে উঠতে পারে মা ও শিশুর মৃত্যুর কারণ

প্রসবকালীন মা ও গর্ভস্থ সন্তানের অবস্থা নিরূপণ, পর্যবেক্ষণ একটি জরুরি বিষয়। অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ প্রসবকালীন পরিচর্যার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রসব পরিকল্পনার প্রস্তুতি গ্রহণ
- কোথায় প্রসব করাবেন, তা আগে থেকেই স্থির করা।
- চিকিৎসক ও চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা।
- জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা।
- হাসপাতালে সঙ্গে কে যাবেন, ঠিক করে রাখা।
- যানবাহনের ব্যবস্থা রাখা। হাসপাতালের দূরত্ব, ট্রাফিক জ্যাম, যানবাহনের ধরন, ড্রাইভারের সঙ্গে যোগাযোগ ইত্যাদি মাথায় রাখতে হবে।
- রক্তের গ্রুপ জেনে রাখা ও গ্রুপের রিপোর্ট সঙ্গে রাখা।
- রক্তদাতার টেলিফোন নম্বর রাখা। জরুরি প্রয়োজনে তাঁর হাজিরা নিশ্চিত করা।
- টাকা বা অর্থের সংস্থান রাখা।
গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব–পরবর্তী বিপদ লক্ষণ সমূহঃ
১. রক্তের চাপ বা ব্লাড প্রেশার ১৪০/৯০ মিলিমিটার বা তার চেয়ে বেশি হওয়া।
২. পা, হাত, মুখ ও চোখে পানি আসা।
৩. তীব্র মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা।
৪. খিঁচুনি হওয়া, চোখ স্থির হয়ে থাকা।
৫. জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে ওঠা।
৬. ১২ ঘণ্টার বেশি প্রসববেদনা স্থায়ী হওয়া।
৭. প্রসবের সময় বাচ্চার মাথার পরিবর্তে হাত, পা কিংবা নাড়ি বের হয়ে আসা।
৮. গর্ভকালীন ও প্রসব–পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়া।
৯. প্রসববেদনা শুরুর আগে পানি ভেঙে যাওয়া।
১০. প্রসব–পরবর্তী সময়ে গন্ধযুক্ত পানি যাওয়া ও শরীরে জ্বর আসা।
উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলি দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মা ও শিশুমৃত্যু রোধ ও তাঁদের সুস্থ রাখার জন্য প্রসব পরিকল্পনা ও প্রসবকালীন পরিচর্যা জরুরি। মনে রাখতে হবে, এ ক্ষেত্রে পরিবারের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।