শিশুস্তনপান

রোজায় স্তন্যদায়ী মায়ের করণীয়

যে মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, রমজান এলে তাদের অনেকের প্রশ্ন থাকে রোজা রেখে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে কি না, শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ পাবে কি না, মা শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করবেন কি না।

এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ হলো রোজা রেখে মা ও তার সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকলে রোজা না রাখাই শ্রেয়। ইসলামে এসব বিষয়ে বাড়াবাড়ি বা জোর-জবরদস্তি নেই। ইচ্ছে করলে পরবর্তী সময়ে রোজাগুলো কাজা আদায় করা যাবে। শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে বা শিশুটি পুরোপুরি বুকের দুধের ওপর নির্ভরশীল হলে রোজা রাখা উচিত নয়। তবে শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে, বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার খেতে থাকলে, সে ক্ষেত্রে স্তন্যদানকারী মায়েদের রোজা রাখতে তেমন সমস্যা নেই।

রোজায় স্তন্যদায়ী মায়ের যা জেনে রাখা দরকার
রোজায় স্তন্যদায়ী মায়ের যা জেনে রাখা দরকার

জেনে রাখা দরকার
রোজা রেখে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে কোনো ক্ষতি হয় না। কারণ মা রোজা রাখলেও তার শরীর আগের মতোই দুধ উৎপন্ন করবে। রোজার কারণে মায়ের শরীরে ক্যালরির ঘাটতি হলেও তা বুকের দুধের পরিমাণের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান এমন মায়েদের ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, দুধের পরিমাণ বিশেষ না কমলেও দুধের গঠন উপাদানের সামান্য পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ জিংক, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের পরিমাণ সামান্য কমে যায়। তবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে শিশু সহজে খাপ খাইয়ে নেয় এবং এতে শিশুটির বৃদ্ধি বা ওজনের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না। খেয়াল রাখতে হবে, শিশুটি সঠিক পরিমাণে পুষ্টি না পেলে কিন্তু কান্নাকাটি করবে, তার প্রস্রাব কমে যাবে।

রোজায় স্তন্যদায়ী মায়ের করণীয় কি
রোজায় স্তন্যদায়ী মায়ের করণীয় কি

করণীয়
স্তন্যদানকারী মায়েরা ইফতারের থেকে সাহরি পর্যন্ত অল্প অল্প পানি পান করবেন। কেননা বুকের দুধ উৎপাদনেও পানির চাহিদা অপরিসীম। রোজার সময় অতিরিক্ত চা-কফি পান না করাই ভালো। এগুলো শরীরকে আরও বেশি পানিশূন্য করে ফেলে। প্রয়োজনে পানিজাতীয় খাবার খেতে পারেন। স্তন্যদানকারী মায়েদের ইফতারও হবে অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। তেলে ভাজা, পোড়া বা মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করুন। পরিবর্তে টাটকা ফলের রস, শরবত, পরিমিত ভাত, মাছ বা মাংস, ডিম, ডাল, সবজি ও সালাদ খান। স্তন্যদানকারী মায়েরা অবশ্যই সাহরিতে এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমাবেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম, মাল্টিভিটামিন, মাল্টিমিনারেলসমৃদ্ধ খাবার খাবেন। রোজা রাখার পর কোনো কারণে মায়ের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে পিপাসা লাগা, গাঢ় বর্ণের প্রস্রাব হওয়া, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি লাগা বা চোখ ও ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা হলে সঙ্গে সঙ্গে পানিশূন্যতা রোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।

Back to top button