ঋতু পরিবর্তনে শিশুর চিকেন পক্স
ঋতু পরিবতর্ন হচ্ছে। আস্তে আস্তে চারপাশের তাপমাত্রা বাড়ছে। এ সময় শিশুর নানা ধরনের অসুখ হয়। বিশেষ করে চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়।

চিকেন পক্সকে অনেকে গুটি বসন্তও বলেন। চিকেন পক্স ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে অসুখ। রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ থেকে, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে শিশুরা আক্রান্ত হয়। চিকেন পক্স সাধারণত ২ থেকে ৮ বছরের শিশুদেরই বেশি হয়। আবার ভাইরাল ইনফেকশন হলে শিশুরা জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয়। শিশুদের ভাইরাল ইনফেকশনে সাধারণত ৪-৫ দিনে এমনিতেই সেরে ওঠে। তবে ধুলাবালি ও ফুলের গন্ধে অনেক শিশুর অ্যালার্জি হতে দেখা যায়।

লক্ষণ : প্রথমে মশার কামড়ের মতো মনে হলেও পরবর্তী সময়ে ঘামাচির মতো দেখায়। আস্তে আস্তে আরও বড় হতে থাকে। এক সময় ফুসকুড়ির মতো দেখায় এবং খুব দ্রুত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত বুকে এবং পিঠেই বেশি হয়। একইসঙ্গে শিশু দুর্বল হতে থাকে, খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে যায়। ভাইরাল ইনফেকশনে শিশুকে যতদূর সম্ভব বিশ্রামে রাখুন। ঘরোয়া দাওয়াই দিতে পারেন। এতে শিশুরা আরাম বোধ করবে। অ্যালার্জি ও হাঁপানি ফুলের গন্ধের কারণে হয়। শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালি থেকেও শিশুরা অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্ত হতে পারে। লক্ষণ হলো নাক দিয়ে পানি পড়ে, বুক চেপে আসা, নাক চুলকায়, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

চিকিৎসা : সাধারণত চিকেন পক্সে আক্রান্ত শিশুর কোনো বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন হয় না। চিকেন পক্স প্রতিরোধে ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে রাখুন। চিকেন পক্স দেখা দিলে শিশুর শরীর খুব চুলকায়। শরীর চুলকালে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিনামিন জাতীয় সিরাপ খাওয়াতে পারেন। শিশুর খাওয়ার রুচি কমে যায়। তাই এ সময় শিশুদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। শিশুদের এ সময় শিং মাছ, কবুতরের মাংস, তাজা শাকসবজিসহ নানা রকম পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারেন। চিকেন পক্স হওয়ার ৫-৬ দিন পর নিমপাতা, হলুদ একসঙ্গে সব শরীরে মেখে ৫-৬ দিন গোসল করিয়ে দিন। ছোঁয়াচে রোগ বিধায় লেপ, কাঁথাসহ শিশুর ব্যবহৃত জিনিসপত্র আলাদা রাখার চেষ্টা করুন।
ভাইরাল ইনফেকশনে আদা, লেবু চা, পুদিনা পাতা, তুলসী পাতার রস, কালিজিরা ইত্যাদি এ সময় শিশুকে দ্রুত সেরে উঠতে এবং আরাম পেতে সাহায্য করবে। তবে দীর্ঘসময় শিশুরা সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অ্যালার্জির আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে শিশুদের এ সময় ধুলাবালি থেকে দূরে রাখুন। বাইরে বের হলে মাস্ক, স্কার্ফ, ক্যাপ ব্যবহার করতে দিন। ফুল নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেওয়া থেকে শিশুদের বিরত রাখুন। শিশুরা যাতে তাজা শাকসবজি খায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে শ্বাসকষ্ট থেকে আরাম পেতে ইনহেলার ব্যবহার করাতে পারেন।