শিশুর বমির কারণ ও করণীয়
শিশুরা বিভিন্ন কারণে বমি করে। একেক বয়সের শিশু ভিন্ন ভিন্ন কারণে বমি করতে পারে।

জন্মের পরপরই নবজাতক যদি বমি শুরু করে, তাহলে খাদ্যনালিতে জন্মগত ত্রুটি আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে। জন্মের দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর যদি বমি শুরু হয়, বমির আগে পেটের ওপরের দিকে চাকা দেখা যায়, বমির রং সবুজ না হয় আর বমির পরপরই বাচ্চা আবার ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে, তাহলে খাদ্যনালির জন্মগত ত্রুটি বা পাইলেরিক স্টেনসিস হতে পারে। দুধ খাওয়ানোর পরপরই যদি বমি করে, তাহলে দেখতে হবে খাওয়ানোর পদ্ধতিতে কোনো ভুল হচ্ছে কিনা।
তিন মাস থেকে এক বছর
রোটা ভাইরাল ডায়রিয়া প্রথমে বমি দিয়ে শুরু হয়, পরে পাতলা পায়খানা হতে থাকে। তীব্র জ্বরে অনেক বাচ্চা বমি করে। শ্বাসনালির সংক্রমণে কাশির সঙ্গে বমি করতে পারে। পেট ফাঁপলে কিংবা গ্যাস হলে পেটব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব বা বমি হয়।
বড় বাচ্চা
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে বমি ও পেটব্যথা হতে পারে। গলায় ইনফেকশন, ঠান্ডা-কাশি ও শ্বাসকষ্ট হলে বমির সঙ্গে কফ যায়। মাইগ্রেন, সাইনাসের ব্যথা, ব্রেইনে ইনফেকশনেও বমি হতে পারে। পেটে কৃমি বা জন্ডিস হলেও বমি হয়ে পেটব্যথা হয়। কোনো ধরনের বদহজম, খাদ্যে বিষক্রিয়া বা অ্যালার্জির জন্যও বমি হয়।

শিশুর বমি হলে করণীয়
অনবরত বমি হলে প্রথমেই বাচ্চাকে বাঁ কাতে শোয়াবেন বা উপুড় করে দেবেন। পরিষ্কার করার পর সোজা করে শোয়াবেন। পরে খাবার দেওয়ার ১৫-২০ মিনিট আগে বমির ওষুধ খাওয়াবেন। এরপর ১৫ মিনিট পরপর এক চামচ করে পানি দেবেন। এক-দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করে এক-দুই চামচ করে জাউভাত দেবেন, পাশাপাশি স্যালাইন খাওয়াবেন। বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি, স্প্রাইট বা সেভেনআপ গ্লাসে ঢেলে গ্যাস বের হওয়ার পর ১৫ মিনিট পরপর এক চুমুক করে খেতে দেবেন। একইভাবে এক-দেড় ঘণ্টা বমি না হলে জাউ, স্যুপ, শরবত, পানি, তরল খাবার একটু একটু করে শুরু করবেন। বমি বন্ধ হয়ে পাতলা পায়খানা শুরু হলে নিওস্যালাইন খাওয়াবেন। স্যালাইন খেতে না চাইলে ডাবের পানি, ইলেকট্রোলাইট ড্রিঙ্ক দেবেন। ধীরে ধীরে কাঁচকলার জাউ ও মুরগির মাংস দিয়ে শুরু করবেন। এর পরও বমি বন্ধ না হলে বা প্রস্রাব কমে গেলে কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।