প্রসব পরবর্তী যত্ন

রোজায় নতুন মায়েদের খাবার ও যত্ন

সন্তান জন্মগ্রহণের পর অনেক নতুন মায়েরই রোজা রাখার ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে পড়েন। নবজাতকের প্রথম ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মাত্র মায়ের দুধই তার প্রধান খাদ্য। কাজেই রমজান মাসে মায়েরা বুকের দুধ কমে যাবে বা দুধ একবারেই পাওয়া যাবে না এই ভয়ে রোজা রাখা নিয়ে একটু দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগেন।

ইসলামী বিধান অনুসারে, সন্তান প্রসবের পর প্রথম ৪০ দিন মায়েদের রোজা রাখার প্রয়োজন নেই। তবে এর পরবর্তী সময়টায় নতুন মায়েরা চাইলে রোজা রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে রোজাদার নতুন মায়েদের খাদ্য গ্রহণ এবং তাদের যত্নের বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা উচিত।

রোজাদার নতুন মায়ের খাবার

সাহরি
সাহরির সময় নবজাতকের মায়ের জন্য প্রোটিনযুক্ত খাবার অবশ্যই প্রয়োজন। এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত, যাতে পুষ্টির ঘাটতি দেখা না দেয়। খাবারের তালিকায় দৈনিক আমিষ বা প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন: ডিম, দুধ, মাছ মাংস, ডাল খাওয়া উচিত। এছাড়া বুকের দুধে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের উপস্থিতির জন্য সবুজ শাবসবজি, দই, পনির, বাদাম, নানা মৌসুমি ফল খাওয়া উচিত।

খাবারের তালিকায় আমিষ বা প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখুন
খাবারের তালিকায় আমিষ বা প্রোটিনজাতীয় খাবার রাখুন

ইফতার
ইফতারে ভাজাপোড়া বা মসলাযুক্ত খাবার নতুন মায়েদের এড়িয়ে চলতে হবে। বরং ইফতারে পরিমিত ভাত, মাছ/মাংস, ডাল ও সবজি, মৌসুমি ফল বা তার রস, সবজি বা মুরগির স্যুপ, খেজুর, শরবত খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে দই, পায়েস, পুডিং ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন।

তরল খাবার
নতুন মায়ের শরীর হাইড্রেট রাখতে এবং বুকের দুধ বাড়াতে তরল খাবার বেশী করে খেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, ঝোল, ডাল, শরবত, সাগু, ফলের রস ইত্যাদি তরল খাবার সাহরী ও ইফতারিতে অবশ্যই রাখা উচিত। এছাড়া ইফতারেরে পর থেকে সাহরি পর্যন্ত বার বার প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা উচিত।

তরল খাবার বেশী করে খেতে হবে
তরল খাবার বেশী করে খেতে হবে

করণীয়
১. নবজাতকের মায়েদের কখনোই ইফতারের পর রাতের খাবার এবং সাহরি বাদ দেওয়া যাবে না।
২. নতুন মায়েদের রোজায় চা কিংবা কফি পান করা উচিত নয়। চা বা কফি শরীরকে পানি শূণ্য করে ফেলে।
৩. নবজাতকের মাকে রোজার সময় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। যা খাবার হজম হতে এবং শরীর ও মন চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে।
৪. স্তন্যদানকারী মায়েরা অবশ্যই দৈনিক দুই গ্লাস দুধ পান করবেন।
৫. নবজাতকের মায়েদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম, মাল্টিভিটামিন, মাল্টিমিনারেলস সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
৬. খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়াম রয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে শক্তি দ্রুত বাড়াতে পারে। তাই ইফতার এবং সেহরির সময় খাবারের তালিকায় খেজুর রাখুন।

Back to top button