খাবার ও পুষ্টি
শিশুদের ফর্মুলা তৈরি করার সঠিক নিয়ম
ফর্মুলা দুধ প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর পুষ্টিগুণ নির্ভর করে দুধ ও পানির সঠিক পরিমাপের ওপর। আপনি শিশুকে যে ফর্মুলা খাওয়াবেন তার প্যাকেটে বা কৌটায় যেভাবে নির্দেশনা লেখা আছে সেভাবেই ফর্মুলা বানাতে হবে। মনে রাখবেন, অন্যের ধারণা বা পদ্ধতি অনুসরণ করে নয়, যেটা আপনি খাওয়াচ্ছেন সেটার নির্দেশনাই অনুসরণ করা জরুরি। তাই দুধ বানানোর আগে কৌটার গায়ে লেখা পরিমাপ ভালো করে বুঝে নেবেন।
ফর্মুলা প্রস্তুত করার জন্য এই ধাপগুলো অনুসরণ করুন
- সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। ফর্মুলা প্রস্তুত করার আগে আপনার হাত সাবান এবং গরম পানি দিয়ে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিন। যে বোতলে ফর্মুলা দুধ প্রস্তুত করবেন সেই বোতল, নিপল এবং বোতলের ঢাকনা খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। এটা খুব জরুরি।
- ফর্মুলার কৌটা ও কৌটা খোলার যন্ত্র পরিস্কার করুন। পাউডার জাতীয় ফর্মুলা মিল্কের কৌটা খোলার আগে, এর ওপরের অংশ ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। যেটা দিয়ে কৌটা খুলবেন (ধরা যাক একটি চামচ) সেটিও ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিবেন।ফর্মুলা যদি তরল হয় তাহলে সেটা খুলতে একটি পরিষ্কার, পাঞ্চ-টাইপ ক্যান ওপেনার ব্যবহার করুন। সহজে দুধ ঢালার জন্য একটি বড় এবং একটি ছোট মোট দুটি ছিদ্র করুন। প্রতিবার ব্যবহারের পর ওপেনারটি ধুয়ে ফেলুন।
- পানি দিয়ে শুরু করুন। সবসময় বোতলে আগে পানি ঢালবেন। এরপর গুঁড়ো দুধ মেশাবেন।
- নিরাপদ পানি ব্যবহার করুন। দুধ বানানোর জন্য সব সময় নিরাপদ পানি ব্যবহার করা জরুরি। ট্যাপের পানি ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে এরপর ব্যবহার করুন।
- সঠিকভাবে পরিমাপ করুন। প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী অনুসারে পানির পরিমাণ এবং গুঁড়ো দুধের পরিমাপ ঠিক করুন। দুধের তুলনায় পানির পরিমাণ বেশি হলে পুষ্টিগুণ কমে যায়। অন্যদিকে দুধ বেশি আর পানি কম হলে, শিশুর কিডনি ও পরিপাকতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে পানিশূন্যতা হতে পারে।
- ফর্মুলা কখনোই পাতলা করে বানাবেন না। টাকা বাঁচানোর জন্য বা ১ কৌটা দুধ বেশি দিন খাওয়ানোর জন্য কখনোই দুধে অতিরিক্ত পানি মিশিয়ে পাতলা করবেন না। এটা খুবই বিপদজনক কারণ অতিরিক্ত পানি মেশানোর ফলে পুষ্টির ঘাটতি অথবা শিশুর খিঁচুনি হতে পারে।
- বোতলটি ভালোভাবে ঝাঁকান। পাউডার বা গুঁড়ো দুধ পানিতে ভালোভাবে মেশানোর জন্য বোতলটি শুধু চামচ দিয়ে না নেড়ে ভালোভাবে ঝাঁকাতে হবে ।
- মাইক্রোওয়েভ বা চুলায় গরম করবেন না। ফর্মুলা কখনো মাইক্রোওয়েভ বা চুলায় গরম করবেন না।অতিরিক্ত গরম হলে শিশুর মুখ পুড়ে যেতে পারে।
- প্রয়োজনে পানি ফুটিয়ে নিন। শিশুর বয়স যদি ৩ মাসের কম হয়, সময়ের আগে জন্ম হয় বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাহলে প্রথমে পানি ফুটিয়ে নিন, এরপর ৫ মিনিট ধরে ঠাণ্ডা হতে দিন। একটি পরিস্কার বোতলে পানি ঢালুন, পরিমাণ মতো গুঁড়ো দুধ দিন, এরপর বোতলের মুখ বন্ধ করে ভালোমতো ঝাঁকান।প্রথমে পানি ফুটিয়ে নিলে ক্রোনোব্যাক্টরের মতো জীবাণু থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের মত দেশে যেখানে কলের পানি নিরাপদ না সেখানে সবসময় পানি আগে ফুটিয়ে ব্যবহার করা উচিত।