খাবার ও পুষ্টিগর্ভধারণ

শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে যত খাবার

মানব দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য যত রকম পুষ্টি প্রয়োজন তার মধ্যে আয়রন অন্যতম। জন্মের পর প্রথম পাঁচ বছরে শিশুর সব রকম বিকাশের মূল ভিত্তি স্থাপন হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অনেক শিশুর দেহে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। আসুন জেনে নেই শিশুর জন্য আয়রন কেন জরুরি ও আয়রনের ঘাটতি পূরণে খাবার সম্পর্কে।

শিশুর জন্য আয়রন কেন জরুরি?

আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রাখে। এই হিমোগ্লোবিন ফুসফুস থেকে সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনে সাহায্য করে। এটি শরীরের পেশীতে অক্সিজেন জমা রাখে এবং পরবর্তীতে কোষের জন্য নির্ধারিত কার্যক্রম গতিশীল রাখতে সাহায্য করে। বাড়ন্ত শিশুর স্নায়ুবিক ও মানসিক বিকাশের জন্যও আয়রন জরুরি। শিশুর শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় আয়রন কম থাকলে আয়রনের ঘাটতিজনিত রোগ দেখা দেয়। আয়রনের ঘাটতির ফলে মূলত যে রোগগুলো হয় তার মধ্যে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রধান। আয়রনের অভাবজনিত কারণে যে রক্তশূন্যতা হয় তাকে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া বলা হয়।

শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে যত খাবার

শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে যত খাবার
শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে যত খাবার

মাংস ও পোল্ট্রি জাতীয় খাবার
এ ধরনের খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। শিশুর আয়রন ঘাটতি পূরণে এ খাবারগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এ জাতীয় খাবার রান্নার পূর্বে অবশ্যই সমস্ত চর্বিযুক্ত অংশ সরিয়ে ফেলতে হবে। খুব ভালোভাবে রান্না করতে হবে যেন শিশু সহজে হজম করতে পারে।

ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুম একটি উচ্চ মাত্রার আয়রন ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এছাড়াও এতে রয়েছে আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। শিশু এমনিতে কুসুম খেতে না চাইলে কাস্টার্ড বা পুডিং বানিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

লাল চালের ভাত
শিশুকে লাল চালের ভাত খাওয়ানো যেতে পারে। লাল চালে শুধু আয়রন নয়, পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন বি থাকে।

মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু আয়রনের ভালো উৎস। আলু সিদ্ধ করে হাতে চটকিয়ে শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।

সি ফুড বা বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ

সি ফুড বা বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ
সি ফুড বা বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ

আয়রন ঘাটতি পূরণে এ খাবারগুলোও শিশুর জন্য সহায়ক। তবে অনেক শিশুরই সামুদ্রিক মাছে এলার্জি থাকতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বাদাম ও শস্যবীজ
বিভিন্ন রকম বাদাম, শুকনো বীজ যেমন মিষ্টি কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ, তিল ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে।

সবুজ শাক সবজি
বিভিন্ন রকম সবুজ শাক সবজি বিশেষ করে পালং শাক, ব্রকলি ইত্যাদি আয়রনে ভরপুর। সাথে খাদ্য তালিকায় টমেটোও রাখা যায়। টমেটো সালাদের পাশাপাশি ঘরে স্যুপ বা সস বানিয়েও শিশুকে দেওয়া যায়।

শিশুর জন্মের পর থেকেই সে সঠিক পরিমাণে আয়রন পাচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বয়স বাড়ার সাথে সাথে আয়রন পাবে এমন খাবারে শিশুকে অভ্যস্ত করা উচিত।

Back to top button