তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর খাবার
শিশুদের খাবার নিয়ে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই। কোন খাবারে ভালো, কোনটা মন্দ, কখন কী খাবে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তাঁদের মনে। আজকে থাকেছে এই বিষয়ে।
সঠিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধির বিকাশের জন্য শিশুকে প্রতিদিন সময়মতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো জরুরি। শিশুরা বাড়ন্ত বয়সে সময়মতো সুষম খাবার না পেলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। মায়েরা শিশুদের খাবার খাওয়ানো নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ভোগেন। কোন বয়সে শিশুকে কী খাবার দেবেন, কতটুকু দেবেন, কতবার দেবেন—এ রকম অনেক প্রশ্ন থাকে তাঁদের।
শিশুর বয়স তিন বছরে পৌঁছার পর তার খাবার রুটিনে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। এ সময় শিশুর খাবারে প্রতিদিন অবশ্যই প্রাণিজ আমিষ দিতে হবে। পাঁচ বছর পর্যন্ত নতুন এই রুটিন অনুসরণ করলে শিশুর সঠিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটতে সাহায্য করবে।
দিনে কতবার খাবার
বড়দের মতো এই বয়সী শিশুদেরও দিনে তিনবার—সকাল, দুপুর ও রাতে খাবার দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে প্রতি বেলা কমপক্ষে চার ধরনের খাবার খাওয়াতে। যেমন—ভাত, মাছ বা মাংস বা ডিম, শাক-সবজি ও ডাল। তিন বেলা মূল খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি এক থেকে দুইবার পুষ্টিকর নাশতা দিতে হবে।
সকাল ১০টার আগে
ঘরে তৈরি একটি রুটি বা পাউরুটির সঙ্গে বাটার, জ্যাম বা জেলি অথবা স্যান্ডউইচ খাওয়ানো যেতে পারে। এর সঙ্গে একটি ডিম ভাজি বা পোচ। অথবা এগুলোর পরিবর্তে এক কাপ খিচুড়ি বা নুডলস দেওয়া যেতে পারে।
দুপুর ১২টায়
পুডিং, সুজি বা পাউরুটি বাটার বা মেয়নেজ দিয়ে অথবা যেকোনো ফলমূল এক কাপ দেওয়া যেতে পারে।
দুপুর ২টা
এক থেকে দেড় কাপ ভাত, খিচুড়ি বা পোলাও। সঙ্গে এক টুকরা মাছ, মাংস, ডিম বা মুরগি। এগুলোর পাশাপাশি এক বাটি শাক-সবজি ও ডাল দিতে হবে।
বিকেল ৫টা
ঘরে তৈরি নুডলস, চিকেন ফ্রাই, পিত্জা, স্যান্ডউইচ, স্যুপ, দই+চিড়া, কলা+পাউরুটি, দুধ+মুড়ি, দুধ+বিস্কুট, সেমাই, লাচ্ছি বা এক কাপ ফলমূল বা রঙিন সালাদ নাশতা হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।
রাত ৮টা
দুপুরের খাবারের মতোই রাতের খাবার খাওয়াতে হবে। এক থেকে দেড় কাপ ভাত, সঙ্গে এক টুকরা মাছ, মাংস বা ডিম। এর পাশাপাশি এক বাটি শাক-সবজি, সঙ্গে ডাল রাখতে হবে।
রাত ১০টা
দুধ শিশুদের বাড়ন্ত বয়সে খুব প্রয়োজনীয় একটি খাবার। ঘুমানোর আগে শিশুকে প্রতিদিন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ দিতে হবে। চাইলে সকালেও শিশুকে দুধ খাওয়াতে পারেন।
খাবার খাওয়ানোর সতর্কতা
শিশুর খাবার তৈরির সময় এবং খাওয়ানোর আগে মা ও শিশুর হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। শিশুর খাবার থালাবাটি, প্লেট, চামচ, গ্লাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হবে। শিশুকে কোনোমতেই বাসি খাবার খেতে দেওয়া যাবে না। ঘরে তৈরি টাটকা খাবার খাওয়াতে হবে। কোমল পানীয়, জাংক ফুড, ফাস্ট ফুড খাওয়ানো থেকে বিরত রাখতে হবে। শিশুকে নিজে নিজে খেতে উৎসাহ দিতে হবে।